লকডাউকালে ইসলামী অনুশাসন পালনে পরিবারে বয়ে যেতে পারে শান্তির সুবাতাস। মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ
লকডাউনকালে ইসলামী অনুশাসন পালনে পরিবারে বয়ে যেতে পারে শান্তির সুবাতাস
মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ।
আন-নূর
দীর্ঘ মেয়াদী সাধারণ ছুটি শেষে চালু হতে শুরু করেছে স্বাভাবিক জীবন। তবে এই সময়ে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবারো লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে দেশজুড়ে। লকডাউনের এই সময়টাতে নিজ পরিবারে একে অপরকে কুরআন শিখানো, তালিম করা, ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন আমল পালন, ব্যক্তি জীবন-অন্যান্য ক্ষেত্রে ইসলামের বিধানসমূহ জানা ও পালন করার মাধ্যমে সবাই নিজ নিজ পরিবারে কাটানো সময়কে মূল্যবান করে তুলতে পারেন বলে মিডিয়াকে জানিয়েছেন রাজধানীর শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ।তিনি বলেছেন, একজন মুসলিমের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামী অনুশাসন মানা অপরিহার্য, জীবনকে বৈশিষ্টমণ্ডিত করা ও উত্তম চরিত্র শিখার অন্যতম মাধ্যম হল মানুষের পরিবার জীবন, তাই লকডাউনের একটি ভাল দিক হল এতোদিন বিভিন্ন কাজের কারণে পরিবার থেকে দূরে থাকা ব্যস্ত মানুষগুলো পরিবারে সময় দিতে পারছেন। খানিক সচেতন হলেই পরিবারের অভিভাবকরা বিশেষজ্ঞ আলেমদের পরামর্শে এই সময়ে পারিবারিক জীবনে ইসলামী বিধিবিধানগুলো শিখার কাজে লাগাতে পারেন।
তিনি বলেছেন, রমজানে ঘরে ঘরে তারাবি ও কুরআন তেলাওয়াতের এক সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, বর্তমানেও আমরা সেই জান্নাতি পরিবেশ চালু করতে পারি আমাদের সবার বাড়িতে। তাহলে আমাদের ঘর নববী জীবনের একটা অংশ হয়ে যাবে বলেছেন দেশ বরেণ্য আলেম মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ।
তিনি বলেছেন, একটা পরিবার সব কিছুর অবকাঠামো। এতে রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থার মতো বিভিন্ন দোষত্রুটিতে বাবা পরিবারের সবার বিচার করেন, আবার পরিবারের সবার খরচের ব্যাপারটাও বাবা নির্ধারণ করেন, এ থেকে যেন রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রশিক্ষণ মানুষ পরিবার থেকেই পেয়ে যাচ্ছে, তাই লকডাউনের সময়ে পরিবারের কাছে এসব শিখার এক মহা সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে বলে বলেছেন মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ।
তিনি বলেছেন, অপসংস্কৃতির সয়লাবের কারণে বর্তমান সময়ে আল্লাহ প্রদত্ত এই মহাপরীক্ষার সময়ে অনেকেই গুণাহের মাধ্যমগুলোতে জড়িয়ে পড়ছেন, এই সময়ে গুণাহ এবং আল্লাহ তায়ালার ক্রোধ থেকে বাঁচতে সবাইকে ধৈর্য্য ধারণ করতে বলেছেন তিনি ।
লকডাউনের দীর্ঘ সময়ে অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইসলামী পারিবারিক জীবন ব্যবস্থা থেকে দূরে সরে আসাকে এইসব অপ্রীতিকর ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি।
এক্ষেত্রে নিউ ইর্য়কে প্রকাশিত ‘ঠিকানা’ নামে একটি বাংলা পত্রিকা রেফারেন্স দিয়ে তিনি বলেন, পত্রিকাটিতে আমেরিকায় প্রতি ১০ জন ধর্মান্তরিতের ৯ জনই মুসলিম বলে উল্লেখ করা হয়েছে, এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, পারিবারিকভাবে বিভিন্ন নিগৃহের শিকার আমেরিকানরা। শুধুমাত্র ইসলামিক পারিবারিক ব্যবস্থার কারণে ইসলামের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই তিনি বলেছেন ইসলামি পারিবারিক ব্যবস্থা আঁকড়িয়ে ধরাই বর্তমান লকডাউনে পারিবারিক সহিংসতা বন্ধের কারণ হতে পারে।
তিনি বলেছেন, ইসলামি পারিবারিক জীবন ব্যবস্থার অনুসরণ না করলে শুধু লকডাউন নয় অন্য সময়েও এই পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটবে।
এছাড়া অভিভাবকরা ইসলামি পারিবারিক জীবন ব্যবস্থা মেনে চললে শিশুদের উপর এর ভাল প্রভাব পড়বে এবং তা তাদের মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে বলে বলেছেন,শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ।

Post a Comment