Header Ads

তুমি সংগ্রামীদের পতাকাবাহী -নূরুল আলম জাওহারী


 

     তুমি সংগ্রামীদের পতাকাবাহী   


-নূরুল আলম জাওহারী


ফেনী জেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা  প্রতিষ্ঠান শর্শদি ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসার স্বনামধন্য পরিচালক, শহীদ মরহুম মাওলানা নজীর আহমদের( রহঃ) সুযোগ্য সাহেবজাদা।শায়খুল হাদীস ফাউন্ডেশন ফেনী জেলার সভাপতি।দুস্থ মানবতার সেবায় নিবেদিত প্রাণ।মাওলানা আল- হাফেজ রশীদ আহমদ সাহেব।

তিনি তাঁর হৃদয় কাড়া অমায়িক ব্যবহার, যাদুময়ী আচার–আচরণ দিয়ে মানুষকে মুগ্ধ করেন।কথা বিনিময়ের সময় যেন তাঁর ঠোটের কোণে বিনীত একটা হাসি ঝুলেই থাকে।ছোটদের জন্য স্নেহপরায়ণও প্রেমময়ী। তারঁ স্নেহ- মমতায় হাজার হাজার ছাত্র বেড়ে ওঠেন।এবং তাঁরা দেশ বিদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সেক্টরে নিরলসভাবে খেদমত করে যাচ্ছেন। তিনি কুয়েতের অর্থায়নে পরিচালিত আল- আমিন সেবা সংস্থার সভাপতি। যার তত্ত্বাবধানে সারা বাংলাদেশে প্রায় তিনশত মসজিদ নির্মিত হয়েছে।দুস্থ মানুষের ধারে ধারে গিয়ে তাদের দুঃখ মোচনের চেষ্টা করেন তিনি।প্রয়োজনে তাদের জন্য ঘর নির্মাণ করে বেড়ান।কুয়েতের প্রবাস জীবনে থাকা অবস্থায় ও কুয়েত ইসলামী ঐক্য সংস্থার প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।

সম্ভবত ২০০৬ সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত প্রায় ১২টি বছর আত্মোৎসর্গ করেছেন জামিয়ার জন্যে। যিনি শর্শদি মাদরাসার দুর্দিনের কাণ্ডারী,তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নিরলস শ্রমের বিনিময়ে শিক্ষা, দীক্ষা, কৃতিত্বে জামিয়ার সুনামখ্যাতি সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।সাফল্য ও কৃতিত্বের ধারা অব্যাহত রাখতে আল-হাইআতুল উলইয়া ২০১৭ সালের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় শীর্ষ মেধা তালিকায় ছিল,
জামিয়ার কৃতি সন্তান,তরুণ প্রতিভাবান আলেম মাওলানা রফিক আহমদ।২০১৪ সালে প্রথমবার বেফাক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে হাফেজ নূরুল আমীন উসামা।২০১৮-১৯ সালেও তাইসীরে তিনজন মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে।ইত্তেহাদ বোর্ডে নাহবেমীরে মেধা তালিকা পেয়েছে।আলহামদুলিল্লাহ।


২০ বছরেরও বেশি সময় আগে আল্লামা নূর বখশ,শহীদ নজির আহমদ (রহঃ) প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে চলে গেলেন।তাদের কাতারে শামিল হলেন জামিয়ার আরেক মনীষী,দীর্ঘ সময়ের আলোকিত প্রিন্সিপাল আল্লামা এনায়েত পুরী (রহঃ)। আকাবিররা চলে গেলেও তাদের স্নৃতিধন্য জামিয়ার সুনাম-সুখ্যাতি একটু ও কমেনি।বরং তাদের রুহানী ফয়েজ ও বরকতে তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

সাধারণত কোন বড় বুজুর্গের পরিচয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচিত হলে সে বুজুর্গের ইন্তেকালের পরে তা গতিহীন হয়ে পড়ে।অনেক ক্ষেত্রে ঐতিহ্য হারিয়ে বেহাল অবস্থায় ধুঁকতে থাকে।কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম শর্শদি জামিয়া।পূর্বপুরুষদের ইন্তেকালের পর তার রুহানী আবহটা হয়ত আগের মত নেই,কিন্তু শিক্ষা–দীক্ষা,ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলার দিক থেকে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে।মুলত এটা নূর বখশ( রহঃ)এর কারামত ও তার গ্রহনযোগ্যতার অন্যতম প্রমাণ।শর্শদি মাদরাসার এই কৃতিত্বপূর্ণ অবস্থানের মূল কারণ নূর বখশ (রহঃ) এর দোয়া।

সময়ের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ধর্মীয় ইস্যুতে আন্দোলন-সংগ্রামে জামিয়ার ছাত্র শিক্ষকদের সরব পদচারণা রয়েছে।জামিয়ার সামগ্রিক উন্নতি - অগ্রগতি ও সৌন্দর্য বর্ধনে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। নিভৃত গ্রামের সুবিশাল এই প্রতিষ্ঠানের নাম জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত হয়েছে বিভিন্ন সময়।এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বালুকণায় তার পূর্বপুরুষ বরেণ্য বুজুর্গানে দ্বীনের স্নৃতি জড়িয়ে আছে।বাবার সুযোগ্য সন্তান হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে সব দিক থেকে দেশের শীর্ষ দ্বীনি বিদ্যাপীঠে রূপান্তর করেছেন।তাঁ উদ্ভাবনী প্রতিটি পদক্ষেপ ও কর্মসূচি সর্বমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।এমন নববী উদ্যানের শিক্ষার্থী হওয়ার সৌভাগ্য অধমের কপালেও জুটেছে।

হে প্রিয় জামেয়া! তোমার বিচ্ছেদ -বেদনায় আমি আজ অসহায়।কৈশোরের মধুর স্মৃতিগুলো আজ তাড়িয়ে বেড়ায়।ফেলে আসা দিনগুলো হাতড়ে বেড়ায় নৈশব্দের কোলে।জামিয়ার পুকুরের জলে ঝাঁপাঝাপির শব্দটা এখনো কানে বাজে।এইতো কদিন আগে শর্শদির পুকুর পাড়ে সহপাঠীরা সবাই দলবেঁধে স্নান করতে যেতাম।যখন শেষ বারের মতো বুলিয়ে নিলাম বিদায়ের বিষণ্ন করুণ দৃষ্টি, আমার তখন বলতে ইচ্ছে করছে নূর নজীরের প্রিয় ভূমিকে।এই যে তোমাকে ছেড়ে যাওয়া, তা কিন্তু তোমার প্রতি অনাগ্রহের কারণে নয়,এবং নয় চিরকালের জন্য। আর এই যে সাময়িক বিচ্ছেদ, তাও তোমার প্রতি আমার হৃদয় ও আত্নার দায়বদ্ধতার কারণে।তোমার ভালোবাসায় শানিয়ে রাখবো বুক।এগিয়ে যাও সফলতার শীর্ষে।প্রভুর দরবারে তোমার আরো উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করছি।আমীন


-নূরুল আলম জাওহারী

আলেম, লেখক, তরুণ উদ্যোক্তা।